মোঃ রুবেল
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় জুলাই গণআন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আন্দোলনে আহত হিসেবে অনুদান দিয়েছে গজারিয়া উপজেলা প্রশাসন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা যায়,জুলাই অভ্যুত্থানে আহত, দুস্থ, প্রতিবন্ধীদের মাঝে সরকারি সহায়তা বিতরণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (০৮ মে) সকালে উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত।
খবর নিয়ে জানা যায়, অনুষ্ঠানে জুলাই অভ্যুত্থান আহতদের সরকারি অনুদানের চেক প্রদান করা হয়। এসময় জুলাই গণআন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা একটি হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি হয়েও আহত হিসেবে অনুদানের চেক পান বাদল বেপারী নামে একজন। অনুদান পাওয়া বাদল বেপারী গজারিয়া উপজেলার পুরান বাউশিয়া গ্রামের কালু বেপারীর ছেলে বলে জানা গেছে। দলীয় কোন পদ পদবী না থাকলেও তিনি একজন একনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে জানা গেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুন্সীগঞ্জে দায়ের করা ৪৩২/২০২৫ হত্যা চেষ্টা মামলার ১২৮ নাম্বার আসামি তিনি।
এদিকে তাকে অনুদান দেওয়ার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কিভাবে বাদলের নাম এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলো তার তদন্ত দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ আপনারা অনুদান দিচ্ছেন ভালো কথা কিন্তু অনুদানের টাকা কারে দিলেন? প্রকৃত আহত ব্যক্তিরা অনুদানের টাকা না পাওয়ায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি গজারিয়া উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করছি’।
এ ঘটনায় সংক্ষুব্দ জহিরুল ইসলাম নামে একজন বলেন, ‘ সে কিভাবে টাকা পায়? সে কোথায় আন্দোলন করেছে? কারা তার নাম দিয়েছে সবকিছুর জন্য জবাবদিহি করতে হবে’।
বিষয়টি সম্পর্কে তার বক্তব্য জানতে বাদল মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান বলেন, ‘ এরকম তো হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি নিয়ে আমি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলবো। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। যদি ঘটনা এরকমই ঘটে আপনারা রিপোর্ট করেন’।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ এ তালিকা করার কাজে আমরা সংশ্লিষ্ট ছিলাম না। আমরা শুধুমাত্র তালিকা ধরে অনুদানের চেক বিতরণ করেছি। তালিকায় নাম থাকা কারো ব্যাপারে যদি আপত্তি থাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে’।
বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত বলেন, ‘ এরকমটা হওয়ার কথা নয় তারপরও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি। এ বিষয়ে আমি একটি তদন্ত কমিটি করে দিচ্ছি’।
এমপি বিপ্লবের সাথে ও পিছনে ফ্যাসিস্ট বাদলের ছেলে শাওন।