আব্দুস সালাম, মুন্সীগঞ্জ
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সকল শহীদ পরিবারকে সরকারিভাবে ভাতা প্রদান করা, সকল আহতদের সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা, প্রয়োজনে চিকিৎসাসেবা দেশে সম্ভব না হলে তাদেরকে বিদেশে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা, আন্দোলনে যারা হাত-পা হারিয়েছে তাদেরকে ইলেকট্রিকাল হাত- পা সংযোজন করা প্রয়োজ বলে মনে করেন মুন্সীগঞ্জের ইউনিয়ন সভাপতি ও সেক্রেটারী সম্মেলনের প্রধান অতিথি জামায়াতের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের যে সকল দপ্তরের সংস্কার প্রয়োজন, তা দ্রুত করা। অন্তর্বর্তীকালিন সরকারের কাছে দাবী জানিয়ে আরো বলেন, যুক্তির সময়ের ভিতরে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়াসহ বিগত সরকারের আমলে প্রশাসনের সকল দপ্তরে গাপটি মারা কর্মকর্তাদের রদবদল করারও দাবী জানান প্রধান অতিথি।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টায় মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পরিবারের সদস্যদের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ মতবিনিময় সভা ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের আমলের ফ্যাসিস্ট কর্মকর্তাদের দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না, ইতিরপূর্বে সাবেক প্রধান বিচারপতির মাধ্যমে জুডিশিয়াল কু করার ষড়যন্ত্র করেছিল যা ছাত্র-জনতা জানতে পেরে তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিয়েছে। এরপরে আনসারদের মাধ্যমে একটি ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। হিন্দুদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতেছিল, এদেশের বিএনপি-জামাত হিন্দু ভাইদের মন্দির পাহারা দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তোমার সম্প্রদায়িক দল নয় বরং এদেশের অন্যান্য ধর্মালম্বীরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কাছে সম্পূর্ণ নিরাপদ।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও মুন্সীগঞ্জ জেলার আমীর মাওলানা আ. জ. ম. রুহুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোঃ সাইফুল আলম খান মিলন, নারায়নগঞ্জ মহানগরির আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম। মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারী মাওলানা এ কে এম ফখরুদ্দীন রাজীর সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শহীদ শরীফ চৌধুরী মানিকের পিতা আনিসুর রহমান চৌধুরী, শহীদ মোঃ সজলের বড় ভাই মোঃ সেলিম।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার তার বক্তব্যে আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে দেশব্যাপী শহীদ ও আহত পরিবারের পাশে সব সময় থাকবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দেশকে স্বৈরাচার , দুর্নীতি মুক্ত করতে পারলে শহীদদের আত্না মুক্তি পাবে। যারা লাশ পুরিয়ে দিয়েছে , গুম খুন করেছে প্রশাসনে তাদের রেখে সংস্কার করা যাবে না। দেশকে অস্থিতিশীল করতে বাহির থেকে গুটি চালছে, আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যারা আমরা একত্রে ছিলাম তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা নুরুল হক পাটোয়ারী, জেলা সহকারি সেক্রেটারী আব্দুল মালেক, জেলা কর্ম পরিষদের সদস্য আরশাদ আলী ঢালী, আক্তার হোসেন, মো: হেমায়েত উদ্দিন, খিজির আব্দুস সালাম, সদর আমীর নুরুল আমীন শিকদার, পৌরসভা আমির এইচ এম বায়েজীদ, টঙ্গীবাড়ী আমীর মাওলানা আব্দুল বারি। এছাড়া উপজেলা আমির ও সেক্রেটারীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে জেলায় শহীদ ৭ জন পরিবারের সদস্যদের নিকট বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। শহীদ সজল, শহীদ মোহাম্মদ সরদার ডিপজল, শহীদ ফরিদ শেখ, শহীদ শাহরিয়ার চৌধুরী মানিক, শহীদ আল আমিন খলিফা ও শহীদ রাকিব হোসেনের পরিবারের সদস্যবৃন্দ। এ পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের পক্ষ থেকে তিন বারে সর্বমোট একেকটি শহীদ পরিবারকে ২,৫০,০০০ (আড়াই লক্ষ) টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।