মুন্সীগঞ্জে বিজ্ঞ আদালতের ভূয়া আদেশনামা তৈরী করার অপরাধে দ্বিতীয়বার এডভোকেট রাকিব শ্রীঘরে

Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার
ভুয়া, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী করে মামলা থেকে অব্যহতি দিয়েছে এমন একটি আদালতের আদেশ বাদীকে দিয়ে হুমকি প্রদান করলে আদেশের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করলে আদেশটি ভূয়া, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে করা তা প্রমাণিত হয়েছে। ভূয়া, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালতের আদেশনামা তৈরী করায় এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন বিজ্ঞ বিচারক। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৫ জুন’২৪) সকাল সাড়ে ১১টার সময়।

আসামী মোঃ তপন মাহমুদ (৪৫), পিতা-মৃত হাসান মোল্লা, মাতা-মৃত সুফিয়া বেগম, সাং- উত্তর হলদিয়া, থানা- লৌহজং, জেলা- মুন্সিগঞ্জ, মোবাইল নং- ০১৭৩৪৪৪৪৬১১০ এর ফেইসবুক আইডি থেকে গত ইং- ১৫ জুন’২৩ তারিখ উক্ত জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী করা বিজ্ঞ আদালতের আদেশনামা পোষ্ট করা হয়। মোঃ তপন মাহমুদ (৪৫) এর স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি রেকডপূর্বক আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণ করে আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামী তপন মাহমুদের নিয়োজিত আইনজীবি এডভোকেট নিখিল চন্দ্র।

এডভোকেট নিখিল চন্দ্র বলেন, বিজ্ঞ আদালত আসামী শংকর ঘোষকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে এনে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলে ঘটনার সত্যতা পায়। শংকর ঘোষ তার নিয়োজিত এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিব এ আদেশনামাটি দিয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। পরবর্তীতে এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা জিজ্ঞাসা করলে তিনি তার দুইজন মহুরী একাজটি করেছেন বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। পরবর্তীতে দুইজন মহুরীকে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা স্বীকার করেন এ আদেশটি এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিবই করেছেন। এই সত্যতার পরে আদালত শংকর ঘোষের নিয়োজিত এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিব জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতের আদেশনামা তৈরী করার অপরাধে ২৫ জুন’২৪ইং তারিখ দুপুর ১২টার সময় জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

তিনি আরো বলেন, ১৫ জুন’২৩ তারিখ বিকাল ০৫.০০ ঘটিকায় আসামী শ্রী শংকর ঘোষ লৌহজং থানাধীন উত্তর হলদিয়া বাজারে অবস্থিত অভিযোগকারীর দোকান শিল্পী টেইলার্স এন্ড ফেব্রিকস নামক দোকানে এসে সাক্ষীদের মোকাবেলায় আদালতের সীল স্বাক্ষর সহ ষ্ট্যাম্প যুক্ত একটি সহি মোহরী নকল অভিযোগকারীকে দেখায় এবং হুমকি দিয়ে বলেন “আমার কিছু করতে পারলি না! দেখ আমি এলাকার মেম্বার। আমাকে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিচার আদালত নং-৩, বিগত ০৫ জুন’২৩ তারিখ তোর দায়েরকৃত মামলা থেকে আমাকে অব্যাহতি/খালাস প্রদান করেছে। এখন মামলার ক্ষতিপুরন বাবদ তাহাকে ০৩ (তিন) লক্ষ টাকা দাবী করেন না পারলে জানে মারিয়া ফেলারও ভয়ভীতি দেখান।

আসামীর জবানবক্তি রেকর্ড থেকে জানা যায়, তখন আসামী শ্রী শংকর ঘোষ আদালতের একটি আদেশ কপি দেখাইয়া বলে “এই সহি মোহরী নকল দিলাম। দেখ আমাকে অব্যাহতি দিয়াছে কিনা।” আসামী শ্রী শংকর ঘোষ বলে এই দেশে সবই সম্ভব। বাদী চ্যালেঞ্জ করে বলেন, যদি আদেশ সত্য হয় তবে ক্ষতিপূরন দিয় দিবো। পরে আসামী শংকর ঘোষ তার হাতে থাকা আদালতের আদেশ যুক্ত দুই পাতার সহি মোহরী নকলটি অভিযোগকারীকে দেয়। যাহাতে ১৪/০৬/২০২৩ ইং তারিখ নকলটি আদালতের নকল শাখা হইতে ইস্যু করা হইয়াছে মর্মে দেখা যায় এবং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচার আদালতের বিগত ০৫/০৬/২০২৩ ইং তারিখের আদেশ লিপিবদ্ধ আছে এবং উক্ত দলিলটিতে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচার আদালত নং- ৩ এর নাম ব্যবহার করা হইয়াছে এবং নকল শাখার একাধিক নকল কারক এবং তুলনাকারীদের স্বাক্ষর ব্যবহার করা হইয়াছে এবং অভিযোগকারীর দায়েরকৃত মামলার টি, আর নং- ৬৩/২৩। ব্যবহার করা হইয়াছে এবং লৌহজং থানার মামলা নং- ০৬(৪) ২২ ব্যবহার করা হইয়াছে।

১৮জুন’২৩ ইং তারিখে নিয়োজিত আইনজীবীর মাধ্যমে উক্ত আদেশের সহি মোহরী নকলের জন্য মুন্সীগঞ্জ আদালতে গিয়া এক দরখাস্ত দাখিল করে এবং ১৯ জুন’২৩ ইং তারিখে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মুন্সীগঞ্জ এঃ নকল শাখা হইতে সহি মোহরী নকল প্রদান করেন। অতঃপর অভিযোগকারীর উত্তোলনকৃত নকল এবং আসামী শ্রী শুকর ঘোষের প্রদানকৃত সহি মোহরী নকল মিলাইয়া দেখেন যে, উভয় নকলের মধ্যে কোন মিল নাই। তখন বুঝতে পারেন আসামী শংকর ঘোষ বিজ্ঞ আদালতের আদেশ জালজালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়।

এডভোকেট নিখিল চন্দ্র আরো বলেন, আসামীদ্বয়ের নিয়োজিত এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিব জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিজ্ঞা আদালতের আদেশনামা তৈরী করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন। পূর্বেও আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ আদালত। আইনজীবিদের আন্দোলনে ৩দিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন এডভোকেট রাকিবুল ইসলাম রাকিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *