আব্দুস সালাম, মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে উৎকোচের বিনিময়ে প্রবাস ফেরত একজনকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনায় খোদ অভিযোগ উঠেছে শ্রীনগর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের এহেন কর্মকান্ডে থানা জুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়। বিষয়টি নিয়ে টক অবদা টাউনে পরিনত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীনগর উপজেলার বাঘরা গ্রামে। উক্ত ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে ভূক্তভোগী প্রবাসী রাহাতের অসহায় মা সুবর্ণা বেগম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শ্রীনগর থানার পুলিশ আরশাদ মাঝির ছেলে আবিরকে বিকাশ নামের চোর বেদম প্রহার করতে থাকে। আবিরকে উদ্ধারের অভিযোগের ভিত্তিতে জসিমের বিল্ডিং-এ রেড দেয় পুলিশ। বিল্ডিংয়ে বিকাশ চোর ও আবিরের মধ্যে মোবাইলের ভাগ নেওয়ার ঘটনায় মারামারির ঘটনা ঘটে।
মারামারির ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায় এবং রাহাত সহ অনেকেই দেখতে যায় উক্ত ঘটনা। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বিকাশ পালাইয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আবিরসহ ভিকটিমকে বিকাশের রেখে যাওয়া অস্ত্রসহ সেখানে পায়। আরশাদ পুলিশের সাথে যোগসাজস করে আবিরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। অপর দিকে পুলিশ প্রবাস ফেরত রাহাত সহ কয়েকজনকে সাক্ষীর কথা বলে থানায় নিয়া আসে। পরবর্তীতে রাহাতকে অস্ত্রসহ কোটে চালান করে পুলিশ।
আরশাদ মাঝির ছেলে আবির মোবাইল চোর ও গাজা সেবনকারী বলে এলাকায় চিহ্নিত। তাকে ঘটনাস্থলে পেয়েও পুলিশ তার নামে মামলা দেয়নি। রহস্যজনক কারণে তাকে ঘটনাস্থল থেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
রাহাতের মা উক্ত ঘটনাটি অত্যন্ত জটিল ও স্পর্শকাতর বলে উল্লেখ করে বলেন, কোন অবস্থাতেই যেন নিরীহ ও নিরাপরাধ মানুষ হয়রানীর শিকার না হয় এবং প্রকৃত অপরাধী প্রভাবশালী বা শক্তিশালী সে যেই হোক সে যেন ছাড় না পায় সেদিকে পুলিশ সুপারকে নজর রাখা একান্ত আবশ্যক বলে দাবী করছেন। অস্ত্রসহ পাওয়া আবিরকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করারও দাবী করা হয় উক্ত অভিযোগে।
ওই এলাকার সাবেক মেম্বার আনোয়ার জানান, রাহাত প্রবাস থেকে আসছে ঘটনার কিছুদিন আগে। এলাকার সন্ত্রাসী বিকাশ আবিরকে আটকিয়ে মারতেছে এই খবর শুনে সকলের সাথে রাহাতও দেখতে যায় সেখানে। কিন্তু ভাগ্য খুবই খারাপ বিকাশ অস্ত্র রেখেই পালিয়ে যায়। অস্ত্রটি আবিরের পায়ের নীচে পায় পুলিশ। পরবতীতে পুলিশ আবিরকে না ধরে রাহতকে অস্ত্র মামলায় দেয় পুলিশ।
স্থানীয় চেয়ারম্যান প্রাথী মোহাম্মদ আলী স্থানীয় প্রত্যক্ষদশী লোকদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, অস্ত্র ঘটনাস্থলে পায়নি। অন্য জায়গার অস্ত্র দিয়ে রাহাতকে অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে চালান করে পুলিশ। বিকাশ চোর ও আবির দুইজনই স্থানীয় মাদক কারবারী।
এ বিষয়ে মালার বাদী এস. আই হামীম মো: তারেক বলেন, রাত ২টার সময় জসিমের বিল্ডিংয়ে অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা অবস্থান করছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ৩জন পালাতে সক্ষম হলেও বাকী তিনজনকে অস্ত্রসহ ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করি। এক প্রশ্নের জবাবে বিকাশ আবিরের উপর অতর্কিত হামলা ও মারধর করে গুরুতর আহত হওয়ার খবর জানে না বলে জানান ঐ পুলিশ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ (প্রশাসন ও অবস) জানান, বিষয়টি শ্রীনগর থানার ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দেখছেন। অভিযোগটি যদিও পুলিশ সুপার বরাবর তবে এ বিষয়ে তাদের কোন বক্তব্য নেই। তিনি শ্রীনগর থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
এ ব্যাপারে ভুক্ত ভোগী পরিবার ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরাপরাধ মানুষকে ফাঁসানোর দায়ে তদন্ত পুর্বক পুলিশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের জরুরী আশু হস্তক্ষেপ ও নজর দারী কামনা করছেন।