নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
২৫০ শয্যা মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স সেবায় নিয়োগপ্রাপ্ত চালক জসিম ও মনির দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে কর্মরত। নানা কারনে অনিয়ম ও ভোগান্তির অভিযোগ এনে গত বছরের ৫ই ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক ভোরের কাগজ।
সংবাদের সুত্র ধরে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই তারিখে ২৪/ ৪১-০৯/১ স্মারকে তাদের শোকজ করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয় কমিটিকে।
হাসপাতালের দেওয়া তথ্যসুত্রে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্স চালক জসিম ও মনিরের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে পরবর্তি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য (২৩ ডিসেম্বর) ৪৫২৫ – ২৪ স্মারকে বিভাগীয় পরিচালক ( স্বাস্থ্য বিভাগ) বরাবর তদন্ত রিপোর্ট সহ আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সবশেষ চলতি বছরের ২ মার্চ বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক আদেশে অ্যাম্বুলেন্স চালক মনির কে টঙ্গীবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জসিম কে ঢাকার কেরানীগঞ্জে বদলি করা হয়।
কয়েক বছর ধরে চলা অ্যাম্বুলেন্স বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি সুদৃষ্টিতে দেখছেন অনেকে। কারন অ্যাম্বুলেন্স বানিজ্যের মূল হোতাই ছিলেন এই দুই জন। যাদের কাছে অসহায় ও জিম্মি ছিল পুরো হাসপাতাল। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগীরা।
তবে এখানেই শেষ নয়, বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, তাদের বদলির আদেশের পর পরই তারা বদলি ঠেকাতে উচ্চ আদালতে রীট করেছেন৷ এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কি এমন আছে এই জেনারেল হাসপাতালে, যেখানে বিভাগীয় আদেশ হওয়ার পরেও বদলি ঠেকাতে হাইকোর্ট রীট করতে হবে?
এমন প্রশ্ন এখন পুরো হাসপাতাল জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। জানা যায়, চালক জসিমের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে সদর হাসপাতালে। বাড়ি এখানেই। তিনি নিজে চালান সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। রোগীদের প্রয়োজনে সরকারি গাড়ির নানা অযুহাত দেখিয়ে নিজের গাড়িতে চড়াও মূল্যে রোগী আনা নেওয়া করে থাকেন। ব্যবহার করেন হাসপাতালের অক্সিজেন সিলিন্ডারও। মনির ও জমিসের যোগসাজশে চলে এই সিন্ডিকেট। তাদের ছত্রছায়ায় অন্যানরাও অ্যাম্বুলেন্স বানিজ্যে জড়িয়ে পড়ছেন।
মো. জসিম ১৯৯৫ সাল থেকে চালক পদে জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন এবং মনির ২০১২ সাল থেকে চালক হিসেবে কর্মরত। এদিকে উভয়ের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ।
এ বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আহমেদ করিম জানান, তাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বদলি করা হয়েছে। শুনলাম তারা নাকি কোর্টে আপিল করেছে। আমরা তাদের রিলিস করে দিয়েছি। নতুন জন এখনো যোগদান করেনি। আ্যম্বুলেন্স চালক শূন্য হওয়ার কারনে আমরা সেবা দিতে পারছি না। এ সময় তিনি আরও বদলি হলে তো যোগদানের ক্ষেত্রে একটু সময় লাগে। আমরা এক সপ্তাহ দেখবো। এর মধ্যে যোগদান না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।