মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জে কোটা আন্দোলন ঘিরে ভাঙচুর ও বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই থানায় ৩টি মামলা হয়েছে। এতে এজাহারনামীয় ৯২ জনসহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনটি মামলায় দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো: হুমায়ুন কবিরকে আসামী করা হয়েছে। মামলা নং ২৭ এ ৩নং আসামী ও ২৮নং মামলায় ৫নং ও পদ্মাসেতু উত্তর থানার মামলা নং ৪, ৩৫নং আসামী করা হয়েছে সাংবাদিক হুমায়ুন কবিরকে।
পুলিশ সুপার জানান, ৩টি মামলার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ২টি ও অপরটি পদ্মা সেতু উত্তর থানায়। ঘটনার পর থেকে বুধবার পর্যন্ত বিভিন্ন মামলা করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে পঞ্চসার ইউনিয়নের নয়াগাও এলাকায় গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাস্তা বন্ধ করে সংঘাতে জড়ায় দুই পক্ষ। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদ রানা ও সাংবাদিক হুমায়ুন কবিরসহ এজাহারনামীয় ১৪ জনকে আসামি করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন সদর থানার এসআই মো. মিঠু ফকির।
এদিকে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার খালইস্ট এলাকায় মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদর উপজেলার সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদ রানা, সাংবাদিক হুমায়ুনসহ ২৮ জন এজাহারনামীয়সহ অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার বাদী সদর থানা পুলিশের এসআই মো. জাহিদ হাসান। এই মামলায়
অন্যদিকে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় গত ১৭ জুলাই লৌহজংয়ের মাওয়ায় পদ্মা সেতু উত্তর থানা মোড়ে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশের বাধার মুখে ব্যাপক সংঘাতের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ছুড়ে থানা কম্পাউন্ডে ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় উত্তর থানার এসআই শাখাওয়াত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। যেখানে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে সেখানেও সাংবাদিক হুমায়ুন কবিরকে আসামী করা হয়েছে।
৩টি মামলায় এজহারনামীয় আসামিদের মধ্যে অধিকাংশ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে সদর থানার দুটি ও পদ্মাসেতু উত্তর থানার মামলায় দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হুমায়ুন কবিরকে আসামী করা হয়েছে। যা তীব্র নিন্দনীয় ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে মুন্সীগঞ্জ সাংবাদিক মহলে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম ও অপস পুলিশ সুপার পদে সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত বদিউজ্জামান জানান, বিষয়টি রাজনৈতিক এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই।
২৭নং মামলার বাদী এস.আই (নি:) মো: মিঠু ফকিরের সেল ফোনে জানান, থানায় আসেন সাক্ষাতে বক্তব্য দেব। অপরদিকে ২৮নং মামলার বাদী মো: জাহিদ হাসানের সেলফোনে ফোন দিয়ে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক হুমায়ুন জানান, টিএসআই রাসেল, সজিবুল, বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেওয়ায় আমাকে দুটি মামলায় জড়ানো হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি আমাকে থানার কিছু অফিসার শত্রæতা বসত মনের ঝাল মিটানোর উদ্দেশ্যে এই মামলায় জড়ালেন। যেমন এস আই ফাইজুর এসআই মাইনুদ্দিন এটিএসআই রাসেল এবং এসআই সজিবুল তাদের কিছু বিষয় অর্থ লেনদেন জেলা প্রতিনিধি হিসেবে আমি জানতে পেরেছি এই জানাটাই আমার অপরাধ হিসেবে তিনটি মামলায় এজহারনামীয় আসামী আমি।
আমি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কোন অঙ্গ সংগঠনে জড়িত নই। সেই ২০১৪ সাল থেকে আমি সমস্ত অঙ্গ সংগঠক থেকে অব্যাহতি গ্রহণ করি স্বেচ্ছায় এরপরও থানা পুলিশ আমার বিরুদ্ধে আমার কন্ঠরোধ করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে আমাকে মামলায় জড়িয়েছে। আমি বলতে পারি হলপ করে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার অফিসারদের দোষ ঢাকতেই আমাকে এই ধরনের মামলাতে জড়িয়েছেন। আমি কোন মারামারি, সন্ত্রাসী কাজের সাথে জড়িত নই, ছিলামও না । তবে কেউ আমার বিষয়ে এই ধরনের অপকর্মের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে পারবে না বলেই মিথ্যা মামলায় আসামি বানিয়ে কন্ঠ রোধ করার চেষ্টা করছে সদর থানার পুলিশ।
আমি সাংবাদিক হিসেবে ভালো কাজের প্রতি আগ্রহ। দেশ ও জনতার উপকার করাই আমার মূল উদ্দেশ্য। আমি কোন খয়ের খাঁ নই সাদাকে সাদা আর কালোকে কালোই বলবো। আর এতে আমার যা হয় হবে। সমাজ উপকৃত হয় এই কাজ আমার প্রধান উদ্দেশ্য। জেলা পুলিশের প্রতি আবেদন থানা পুলিশের অপরাধ খতিয়ে নজরদারি রাখা। যারা প্রকৃত অর্থে অপকর্ম করছে তাদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।