গজারিয়া কলিম উল্লাহ কলেজে অধ্যক্ষ অবরুদ্ধ

Spread the love
আমিরুল ইসলাম নয়ন, গজারিয়া 
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে কলিম উল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এসময় অধ্যক্ষ এবং সাধারণ শিক্ষক তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে বলে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ করেছেন।
খবর নিয়ে যাওয়া যায়,গত ০৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্বাভাবিক ছিল কলেজটির কার্যক্রম। তার কিছুদিন পর কলেজটির হিসাব রক্ষক হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলেজের অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার বিরুদ্ধে আন্দোলন নামে কলেজটির কয়েকজন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী । তবে অধ্যক্ষের দাবি আন্দোলনকারী শিক্ষকদের পায় সবার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ  রয়েছে। এসব বিষয়ে তিনি কঠোর অবস্থানে থাকার কারণে তাকে সরিয়ে দিতে চাইছে একটি মহল।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানায়, কলেজটির হিসাব রক্ষক হানিফ মিয়ার মাধ্যমে অনেক টাকা অন্যায়ভাবে হাতিয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে লোন নিয়ে সেটা পরিশোধ না করা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম করে টাকা নিয়ে সেটা আত্মসাৎ। ভর্তি, ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজার বিরুদ্ধে। সেজন্য আজ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন।
কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক শাহিনূর বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করায় আজ ভবেরচর বাজার এলাকায় তাকে মারধর করে কয়েকজন বহিরাগত। অধ্যক্ষ বহিরাগত লোকজন ভাড়া করে তাকে মারধর করিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কলেজটির অধ্যক্ষ মোনতাজ উদ্দিন মর্তুজা বলেন, ২০১১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি কলেজটির চিত্র পাল্টে দেই। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করি। কলেজ পর্যায়ে থাকা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমি প্রথমে ডিগ্রী কোর্স পরবর্তীতে অনার্স কোর্স চালু করার ব্যবস্থা করি। আশেপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা এখন এই প্রতিষ্ঠানে অনার্স করার সুযোগ পাচ্ছে। বিভিন্ন বিষয়ে আমার কঠোর অবস্থানের কারণে প্রথম থেকে আমার কলেজের কতিপয় শিক্ষক আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। এই সকল শিক্ষকদের কয়েকজন আবার নন-এমপিও ভুক্ত। নিয়োগ জালিয়াতি, অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করে লোন নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তারাই এখন শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে এবং বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে এনে কলেজের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। আমি কলেজ ফান্ড থেকে কিছু টাকা লোন নিয়েছি সেটা আমি পরিশোধ করবো এখানে অনিয়মের কি হলো? বলা হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে আমি টাকা আত্নসাৎ করেছি আপনারাই এসব ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটিকে পাশ কাটিয়ে অধ্যক্ষের একার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোন সুযোগ আছে?এটা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয় টাকার বিনিময়ে কিছু বহিরাগত লোক ভাড়া করে এনে আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হচ্ছে। আজকে তারা আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছে। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি আমার বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় আমি সেই শাস্তি মাথা পেতে নিব তবে কুচুক্রি মহলের চাপে নতি স্বীকার করে আমি পদত্যাগ করব না।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বলেন, কলেজটির কয়েকজন শিক্ষক অনিয়মের অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি একটি তদন্ত কমিটির করে দিয়েছিলাম। তারা তদন্ত প্রতিবেদন আমার কাছে জমা দিয়েছেন আমি সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই সময় পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতে আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *