৪ জুলাই বঙ্গীয় আইন পরিষদ সদস্য আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরীর মৃত্যু বার্ষিকী

Www.munshiganjcrime.com
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

আব্দুস সালাম, মুন্সীগঞ্জ
৪ জুলাই ২০২৩ অবিভক্ত ভারতের বঙ্গীয় আইন পরিষদ, পাকিস্তান প্রাদেশিক ও জাতীয় পরিষদের প্রাক্তন সদস্য প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক ও সাহিত্যসেবী আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরীর ৩৭ তম মৃত্যূবার্ষিকী। ১৯৮৭ সালের এই দিনে বাধ্যর্কজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৯৭ বছর বয়সে তিনি ঢাকার পিজি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে তৎকালিন জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয় এবং তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী শোক প্রস্তাব পেশ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।

মরহুমের ৩৭তম মৃত্যূবার্ষিকী উপলক্ষে এই দিন পারিবারিকভাবে মরহুমের কবর জেয়ারত, কোরআনখানি এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মহফিল অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ১৫ জুলাই আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী স্মৃতি সংসদ,স্মৃতি পাঠাগার ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত মুন্সীগঞ্জ কাজি কমরুিদ্দন গভঃ ইনস্টিটিউশন যৌথভাবে স্কুল প্রাঙ্গনে স্মরণসভা এবং মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী ১৩০০ সালের অগ্রহায়ণ মাসে মুন্সীগঞ্জ শহরের র্কোর্টগাঁও গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম কাজী ইব্রাহীম হোসেন ছিলেন একজন বিত্তশালী ও প্রভাব প্রতিপত্তিশালী তালুকদার । কাজী ইব্রাহীম হোসেন একজন দয়ালু ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন বিদ্যালয় মুন্সীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত ছিলেন এবং বহু জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন। পিতার অনুপ্রেরনা এবং প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী জনসেবার মানসে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। বৃটিশ শাসনের অধীনে ১৯৩৫ সনের ভারত আইন অনুযাযী ১৯৩৭ সালে প্রথম সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, সেই নির্বাচনে আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী মুন্সিগঞ্জ (পুরো মুন্সিগঞ্জ মহকুমা নিয়ে নির্বাচনী এলাকা ) থেকে বিপুল ভোটে অবিভক্ত ভারতের বাংলার আইন পরিষদের সভ্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলা প্রদেশ হতে নিখিল ভারত মুসলীম লীগ কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সদস্য মনোনিত হন এবং ১৯৪৬ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নার সভাপতিত্বে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত মুসলীম লীগ কনভেনশনে বাংলা প্রদেশের প্রতিনিধি হিসাবে যোগদান করেন । এই সময় বৃটিশ সরকার তাঁকে খান বাহাদুর খেতাবে ভূষিত করতে চাইলে তিনি তা প্রত্যাখান করেন। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে অবিভক্ত ভারতে বাংলার আইন পরিষদে তিনি পুনরায় বিপুল ভোটে জয়ী হন এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর একাদিক্রমে ৫৪ সাল পর্যন্ত আইন সভার সভ্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৩ সালে তিনি তৎকালিন মুন্সীগঞ্জ মহকুমা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা থেকে বিপুল ভোটে পাকিস্থান জাতীয় পরিষদের সদস্য ( এম এন এ) নির্বাচিত হন। সুদীর্ঘ ২৯ বছর অবিভক্ত ভারতের বাংলার আইন পরিষদ, পূর্ব পাকিস্থান আইন পরিষদ ও জাতীয় পরিষদের সদস্য থাকাকালীন সময়ে তিনি প্রজাস্বত্ব আইন,প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা আইন,মাদ্রাসা শিক্ষা আইন, ঋণ সালিশী বোর্ড আইন,মহাজনী উচ্ছেদ আইন ও জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ আইন সহ অসংখ্য জনকল্যাণ মূলক কাজে সক্রিয় ও সার্থক অংশ গ্রহণ করেন। তিনি মন্ত্রীর পদমর্যাদায় পূর্ব পাকিস্তান গভর্ণর আজম খানের উপদেষ্টা ছিলেন। মুন্সীগঞ্জে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এছাড়া তিনি তৎকালীন সওগাত, মানসী, মোহাম্মদী, প্রবাসী, সাম্যবাদী ও সোলতান প্রভৃতি পত্রিকার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। গ্রামের কথা নামে মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রকাশিত একটি পাক্ষিক পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করতেন। চীনে ইসলাম, সাহিত্য কথা, পানের বোরজ, হরগঁঙ্গা কলেজের ইতিহাস ও প্রসঙ্গ কথা প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম।

Share

Www.munshiganjcrime.com
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •