মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটাতে উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান উঠে পড়ে লেগেছেন। সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের নয়ানগর জে.এল নং ০২৬ মৌজার ৫৩৭ খতিয়ানের ২৪০৫, ২৪০৬ এর সর্বমোট ১.২৫০০ একর জায়গা দখল করছে একটি সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটটিতে সর্বমোট ২৫জন সদস্য রয়েছে। এই সিন্ডিকেটের নামে একটি সমিতি খোলা হয়েছে। অভিযোগ উঠছে সেই সমিতির মূল নায়ক নাহিদ। যিনি বর্তমানে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সিরাজদিখান। তিনি এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে ভূমি দখল থেকে শুরু করে নানা অপরাধ সংগঠিত করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিন ঘুরে বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকাল ১০টায় দেখা যায় ভেকু দিয়ে মাটি কাটছে। সাংবাদিক আসছে এই ম্যাসেজ পাওয়ার পরে ভেকুটি অন্যত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে। কোন সাংবাদিক আসে কিনা এই খবর দেয়া নেয়ার জন্যও ওখানে লোক বসানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ভেকু দিয়ে মাটি কাটারও অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় একজন কৃষক জানিয়েছেন তিন ফসলি জমি দেদারছে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানী ও নাহিদ চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ভরাট কাজ ও মাটি কেটে বিক্রি করার হিড়িক চলছে। এখানে ইরি ধান, সরিষা ও বিভিন্ন সবজি চাষ হয়। এভাবে ভরাট ও মাটি কেটে বিক্রি করলে খাদ্যে চরম ঘাটতি হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। এটার জন্য মূল কাজ করছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান।
স্থানীয়রা আরো জানান, বর্তমানে বিচৌধুরীর নতুন বাইপাস সড়কটি নির্মাণ হচ্ছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সড়কটির ডানে ও বামে মাটি কেটে বিক্রি করছে নাহিদের নেতৃত্বে ২৫জনের একটি টিম। এহেন কাজ নেই সিরাজদিখানে যা নাহিদ সাহেব করেননা।
বিষয়টির খোজ নিতে রাজানগর ভূমি অফিসে নায়েবের কাছে জিজ্ঞাসা করলে দেখা যায় এই সম্পত্তি সম্পূর্ণরূপে সরকারের। কাউকে লিজ দেয়া হয়নি। চেয়ারম্যান আপত্তি দেওয়ার পরেও ইউপি ভূমি অফিস ও উপজেলা ভূমি অফিস কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ভলিয়মে স্পষ্ট লেখা রয়েছে আর এস ১০৫১ নং দাগের ৩৪ শতাংশ মান্নানের নামে দলিল নাই। অর্থাৎ ভূয়া দলিল দিয়ে নাম জারিও করেছেন বলে ২৫জন সদস্যের মধ্যে অধিকাংশ জানিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে উত্থানের পূর্বে তিনি ফ্লাক্সি লোডের ব্যবসা করতেন সাথে তিনি মাদকের ব্যবসা করতেন। মাদকের টাকা দিয়েই তার উত্থান হয়েছে বলে এলাকায় জনশ্রæতি রয়েছে।
সমিতির একজন জানিয়েছেন পাওয়ার অব এটর্নি নিয়ে জমি ক্রয় করেছি দলিলও আছে। পূর্বের যে মালিক তার নামে নাম জারিও রয়েছে। যেখানে ভূমি অফিসের মূল নথিতে সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা সেখানে কিভাবে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জবর দখল করে মাটি কেটে বিক্রি করছে?
রাজানগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব ইব্রাহীম জানান, বন্ধু মহল সমিতির মাধ্যমে এই মাটি কাটার কাজ চলছিল। ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইউপি নায়েব জানান, আমি ২মাস হয় যোগদান করেছি। এই জমির নাম জারি হয়েছে কিনা জানি না। উপজেলায় গিয়ে দেখবো।
রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, খ তফসিলের জায়গা। সম্পূর্ণ জায়গাটি সরকারি। দুষ্কৃতিকারীরা জায়গাটি দখলের পায়তারায় নেমেছে। আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে রেখেছে।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাইনুল হাসান নাহিদ জানান, তিনি এই সমিতির সদস্য নন। সরকারি ভূমি দখল করে মাটি কাটার সাথে আমি জড়িত নই। আমার নাম কেউ বলে থাকলে মিথ্যা বলেছে।
সিরাজদিখান উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানার সেলফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভি করেননি। তার হোয়াটস এ্যাপে ম্যাসেস দিয়েও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।