মোঃ রুবেল
গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক্সপ্রেসওয়েতে কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে বরিশাল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী বাসটির ছাদ উড়ে যায়। বাস না থামিয়ে ছাদবিহীন গাড়িটি ৮ কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে যান চালক। পরে কুমারভোগ গিয়ে গাড়িটি উল্টে যায়। এই গাড়ির নীচে পড়ে যায় ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলার মহৎপুর গ্রামের আব্দুস সালাম হাওলাদারের ছেলে মো: সালাউদ্দিন (৪২)। ঐ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। কিন্তু কেউই তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি। ৪০মিনিট ধরে গাড়ির নীচে পা আটকে পড়েছিলেন তিনি।
তিনি আরো জানান, তিনি টিকিট কেটে এ১ সিটে বসে ছিলেন। হঠাৎ করে কিছু একটার সাথে বাঐদিনের ঘটনায় আহত মো: সালাউদ্দিন জানান, বরিশাল এক্সপ্রেস বাসটি সায়দাবাদ থেকে ৬.৩০টায় বরিশালের উদ্দেশ্যে ছাড়ার কথা থাকলেও ছাড়ে ৭.৩৭টায়। গাড়িটি পোস্তাগোলা যাওয়ার পরে হেলপার ও ড্রাইভারের সাথে পোস্তাগোলার একজনের সাথে তর্কবিতর্ক হয় দীর্ঘ ৪০ মিনিট ধরে। হেলপার ও কন্টাকটর লোকটিকে লাথি মেরে নামিয়ে দেন। এর পর থেকেই বেপরোয়া গাড়ি চালান ড্রাইভার।সটির সজোরে সংঘর্ষ হয় তখন রাত ৮.২৫ বাজে। এ সময় বাসটি ছাদ উল্টে একপেশে হয়ে যায়। পরোক্ষনে পুরো বাসটি ছাদ বিহীন হয়ে যায়। ঘটনার সামনেই পুলিশ থাকায় বাসটি বেপরোয়া গতিতে প্রায় ৮০-১০০ কিলোমিটার গাতিতে চলছিল তখন। যাত্রীরা থামাও থামাও বলে চিৎকার করলেও ড্রাইভার কারো কথায় কর্নপাত করেনি। এ অবস্থায়ই ৮-১০কি.মি. গিয়ে বাসটি উল্টে যায়। আমি বাসের নীচে পড়ে যাই। পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের লোকজন উদ্ধার কাজ শেষ করে চলে যায়। কিন্তু আমি গাড়ির নীচে পড়ে আটকে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করলেও কেউ আমার ডাক শুনতে পায়নি। ৪০মিনিট ধরে আমি এভাবে বাসের নিচে আটকে ছিলাম। এসময় আমি দেখি বাম পা ভেঙ্গে গেছে এবং ডান পা ভিতরে আটকে আছে। কেউ আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসছে না। ৪০মিনিট পরে স্থানীয় কিছু লোকজন আমাকে দেখতে পায় এবং একটি বাসকে থামিয়ে সেই বাসের যাত্রীদের নামিয়ে বাসটি সোজা করে আমাকে বাসের নীচ থেকে উদ্ধার করে। কেউ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও এগিয়ে আসেনি। দুর্ঘটনার ১ঘন্টা পরে পরবর্তীতে দুইজন বাইকারকে অনুরোধ করে তাদের বাইকে চড়ে শ্রীনগর একটি বেসরকারি হাসপাতাল (দেলোয়ারা ইয়াসমিন হাসপাতাল) চিকিৎসা নেই। পরবর্তীতে পরীক্ষা করে দেখতে পাই বাম পা ভেঙ্গে গেছে ডান পাও যখম হয়েছে। পরবর্তীতে একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে রাত -১১ টায় মোহাম্মদপুর মমতাজ ট্রমা সেন্টারে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন পর্যন্ত এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন আছি।
