আব্দুস সালাম, হুমায়ুন কবির ও নয়ন মিজি মুন্সীগঞ্জ
নাম মাত্র সমিতির চাদাঁ আদায়কে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় দফায় বন্ধ হলো মুন্সীগঞ্জ-নারায়নগঞ্জ লেগুনা। কারনে অকারণে একের পর এক ড্রইভারদের হুমকী দিয়ে রাখছে রাখছেন এই ভূয়া সমিতির সভাপতি দিদার। গত সপ্তাহে এই রুটে চাদাঁর কারনেই ৫দিন লেগুনা চলাচল বন্ধ ছিলো। দুই জেলার দুই এমপির দোহাই দিয়ে এই রুটে চাঁদা আদায়ে চলছে নিরবে। শনিবার (১৩ মে) সকাল ৮টায় মুন্সীগঞ্জের মোক্তারপুর লেগুনা চলাচল বন্ধ অবস্থায় দেখা যায়। ড্রাইভারদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে। মালিক ড্রাইভারদের চাঁদাবাজির জেরে যাত্রীদের ভোগান্তি ও হয়রানী চরমে পৌছেছে।
লেগুনা বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিএনজি ও অটো মোটা অংকের টাকা ভাড়া আদায় করছেন। অটো একেকজনের থেকে ভাড়া নিচ্ছেন ৫০টাকা, সিএনজি ভাড়া নিচ্ছেন ৮০টাকা। জনসাধারণের কাছ হতে নিচ্ছে মোটা দাগে ভাড়া। চরম হয়রানীর শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের হয়রানী বন্ধে কোন পক্ষেরই কোন উদ্যেগ লক্ষ্য করা যায় না।
প্রায় ১০হাজার লোক প্রতিদিন মুন্সীগঞ্জ হতে নারায়নগঞ্জ যাতায়াত করেন ৪০ টাকায়। মুন্সীগঞ্জ ফেরার পথে ৬০-৭০ টাকা দিয়ে আসতে হয় মুক্তারপুরে। মাঝ পথে ড্রইভাররা তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। দিদার ও রওশন ও সদস্য মরণ ড্রাইভারদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক। তাদরে কথামতো না চালালে তাদের পায়ে গুলি করারও হুমকি প্রদান করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন উপস্থিত ড্রাইভারগণ।
শনিবার (১৩ই মে) সকাল ৮টা হতে মুন্সীগঞ্জ মুক্তারপুর হতে নারায়নগঞ্জ চাষাড়া লেগুনা চলাচল বন্ধ করে দেয় ড্রাইভারগণ। নারায়নগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের মালিক পক্ষের চাঁদাবাজীর প্রতিবাদে লেগুনা চলাচল বন্ধ করে দাবী আদায়ে আন্দোলন করছেন মুক্তারপুর লেগুনা স্ট্যান্ডে।
ড্রাইভারদের দাবী একের পর এক সমস্যা আমাদেরকে মাথায় নিয়ে গাড়ী চালাতে হয়। তেলের দাম যখন ৬৫ টাকা ছিল তখনও খরচ হয়েছে ৪১০ টাকা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ড্রইভার বলেন , এক সিঙ্গেল ৪৮০ টাকা কামাই করি। বর্তমানে তেলের ১০৯টাকা খরচ দিতে হয় ৪১০ টাকাই বর্তমানে ড্রাইভারদের কোন ইনকামই নাই। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে রাতে বাজার করতে পারি না। মালিক পক্ষকে চাঁদা দিতে দিতে আমরা হয়রান। রাস্তার নতুন খরচ মেটাতে বা নতুন চাদা আমাদের মেটাতে হয়। আমরা কি করতে পারি? এমন দুঃখ প্রকাশ করেন মুক্তারপুর উপস্থিত ২০-২৫জন লেগুনা ড্রাইভার। কেউ কোন প্রতিবাদ করলেই তার উপর চড়াও হয়ে থাকে সমিতির নেতারা। অপরদিকে প্রতি লেগুনা থেকে ২০টাকা করে সঞ্চয় হিসেবে রাখেন মালিক সমিতি। প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার টাকার মতো উঠে মাসে ১লাখ ৮০হাজার টাকা। ৬ বছরের মধ্যে যে টাকা সঞ্চয় হয়েছে তারও কোন হিসাব এ পর্যন্ত সমিতির সভাপতি সেক্রেটারি দেননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য ড্রইভার বলেন , এক সিঙ্গেল ৪৮০ টাকা কামাই করলে লেগুনা মালিক পায় ২০০টাকা , রুটে চাদা দিতে হয় ১৬০টাকা, আরো ৫০ টাকা লাইন চাঁদা, সর্বমোট ৪১০ টাকা। ৪১০টাকা বাদ দিলে বাকী থাকে ৭০ টাকা। এই ৭০টাকার মধ্যে জ্বালানী খরচ রয়েছে। ড্রাইভারের আর গাড়ীর জ¦ালানী খরচ কেমনে মিটাতে পারি? এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকদের কাছে। তিনি আরো বলেন রাস্তায় চাদাঁবাজদের ঘরে পৌচ্ছে যায় তাদের টাকা আর আমরা এই রোদ,বৃষ্টিতে রাস্তায় থেকে সংসার চালাতে পারি না । কথায় কথায় মাইরের হুমকী আসে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
এই রুটের বয়স্ক ড্রাইভার ভুলু মিয়া।তার দোষ দিন দিন চাদাঁর অংক ভাড়ছে,তাদের সংসার চালাতে কষ্ট হয় । এমন কথা বলাতে ভুলু মিয়াসহ ৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা হয়েছিল বলে জানা যায়। ভুলু মিয় নিজেও তা স্বীকার করেন সংবাদ কর্মীদের কাছে।
এ বিষয় সমিতির সভাপতি মোঃ দিদার হোসেন বলেন ভুলু মিয়া সহ আরো কয়েকজনকে এই রুট হতে বহিস্কার করলেও আমি বিষয়টি জানতে পেরে আবারও গাড়ী চালাতে বলেছি। তবে গত সপ্তাহে লেগুনা বন্ধ থাকলেও আবার চালু হয়েছে। এখন আবার বন্ধ হয়েছে তা দুঃখজনক।
এ বিষয় কথা হয় মালিক সমিতির অন্যতম সদস্য মরণ মিয়ার সাথে। তার সেল ফোনে মরণ মিয়া বলেন গত সপ্তাহে লেগুনা বন্ধ হয় একটা নতুন লেগুনাকে কেন্দ্র করে। আমরা নারায়নগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ এমপি সাহেবদের মাধ্যমে তা সমাধান করেছি। এখন কিচু ড্রাইভাররা নতুন করে নেতা হওয়ার চেষ্ট করছে। ঐ নতুন নেতাদের কারনেই আরেকটি ঝামেলা আজকে হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরাই বন্ধ করে দিবো। ড্রইভাররা নতুন নেতা হওয়ার সাধ তাদের কাছেই থাকবে।
ড্রাইভাররা কথা না শুনলে অনেক সময় ড্রাইভারদের গুলি করার হুমকী দিয়ে থাকেন এমন প্রশ্ন করলে অভিযোগটি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, আমি এবং আমাদের সমিতির সভাপতি দীর্ঘদিন যাবৎ এই রুট পরিচালনাতে আছি। ড্রইভাররা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। প্রতিদিন যে টাকা উঠে তার বিষয় আমাদের সভাপতি নিজের হাতে সমিতির কাজে ব্যয় করেন।