মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
স্বামী আফজাল মিশুক চালক। স্ত্রী শেফালী বেগম মুক্তারপুরের একটি কারখানায় চাকুরী করেন। ৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তার। ভয়ংকর মাদক শয়তানের নি:শ্বাস ব্যবহার করে সেই সন্তানকে কিডনাপিং করে তাকে দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। ইতিমধ্যে ভয়ংকর মাদক শয়তানের নি:শ্বাস নাকের সামনে ধরেই আপনাকে হিফনোটাইস করতে পারে। এই মহিলার সাথে হয়েছে তাই। ছেলেকে সামনে থেকে সরিয়ে নেয় তিনটি লোক। লাল গেঞ্জি পরিহিত ১জন, সাদা কালো জামা পরিহত একজন, সাদা গেঞ্জি আর টুপি পরিহিত। ঢাকা শহরের মতো মুন্সীগঞ্জেও হর হামেশায় ঘটছে এই শয়তানের নি:শ্বাসের প্রয়োগ। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে বুধবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার সময়। রাতে অভিযোগ দিতে আসা ভিকটিমের কোন কথাই আমলে না নিয়ে থানার ডিউটি অফিসার আরিফ স্বাক্ষীদের নিয়ে আসতে বলে বিদায় দেন।
শেফালী জানান, আমি আওয়ামীলীগ নেতা সোলেমান বেপারীর ফ্লাটের ভাড়াটিয়া। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় আমার বাসায় ছেলেকে নিয়ে প্রবেশ করার পূর্বে দশকানি মসজিদের গেটের সামনে আমাকে আন্টি বলে একটি ছেলে ডাক দেয় পিছন থেকে। পরে আরো দুইজন আসে। ৫ বছরের ছেলেকে না পেয়ে দিশেহারা শেফালী বেগম। এমন সময় আমার কাছে তিনজনে মিলে ১লাখ টাকা দাবী করে। পরবর্তীতে কোন টাকা পয়সা না থাকায় শেফালীকে প্রতারক চক্র বলেছে স্বর্ণের জিনিস যা আছে তাই দেও। পরবর্তীতে প্রতারক চক্র মুন্সীরহাট নিয়ে স্বর্ণকারের দোকান থেকে বন্ধক রাখা স্বর্ণ দিয়ে আরো ৪০হাজার টাকা উত্তোলনের জন্য চাপ দিয়ে নিয়ে যায়। সেখান থেকে উঠাতে না পেরে এক ঘন্টার সময় বেঁধে দেয় প্রতারক চক্র। এক ঘন্টার মধ্যে ৪০হাজার টাকা না দিতে পারলে ছেলেকে পাওয়া যাবে না। পরবর্তীতে রংপুরের ভাগিনী জামাইকে ফোন দিয়ে কয়েকটি বিকাশের নাম্বারের মাধ্যমে ৪০হাজার টাকা আনা হয় সমুদয় টাকাটা লাল গেঞ্জি পরিহিত ছেলেটিই হাতিয়ে নেয়। ভাড়া বাড়ির সামনে এসে ঘরে থাকা স্মার্ট ফোনটিও চায় সেটি শেফালি কিছু না বুঝেই দিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার এমন এক ঘটনার সন্ধান পেলে কয়েকজন সাংবাদিক ভাড়াটিয়ার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জেনে থানায় অভিযোগ করানোর জন্য আনা হয় কিন্তু ডিউটি অফিসার তার সকল কথা শুনে মিশুক চালক ও ভিকটিম মহিলাকে জানায় যারা এই ঘটনার স্বাক্ষী রয়েছে তাদেরকে নিয়ে আসেন পরে মামলা হবে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাংবাদিক ডিউটি অফিসার আরিফ সাহেবকে প্রশ্ন করলে যে এমন অসহায় পরিবার থানায় আসছে সকল স্বাক্ষীদের নিয়ে আসতে বললে পরবর্তীতে সে আর থানামুখিই হবে না। তিনি এক সাংবাদিককে বলেন, আপনিই এগুলো করান।
দেড় মাস পূর্বেও একজন মাদ্রাসা শিক্ষককে দুধবাজার থেকে একইভাবে শয়তানের নি:শ্বাসের কবলে ফেলে ৪০হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সেই টাকার বিষয়ে কিডনাপারগণ সেই সময়কার তদন্ত অফিসার এসআই বাসারের সামনে শিক্ষককে আটকিয়ে পিটিয়ে ৪০হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয় স্বীকার করলেও অপরাধীদেরকে না ধরে ভিকটিম ও অপরাধীদের মিমাংসা করে দেন।
স্থানীয়দের অভিমত দশকানি, পেট্রোলপাম্প ও ঘটনার আশপাশে অনেকগুলো সিসি ক্যামেরা রয়েছে। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করলেই এই ভয়ংকর মাদক ব্যবহারকারী চক্রদের পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে।
এ বিষয়ে শেফালী বলেন, তারা একটি ব্যাগে বারবার ক্যামিকেলের কথা বলেছে। এটা নিলে আমাকেও অংশিদার দিবে। এর পরে আমি তাদের কথানুযায়ী সকল কিছু করেছি। ৪০ হাজার টাকা হারিয়ে টের পেয়েছি যে আসলে আমি কি করেছি। আমি ঘটনার পর থেকে অসুস্থ।
এ বিষয়ে সহকারি পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সুমান দেব জানান, বিষয়টি আমি দেখবো।