ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধভাবে দন্ত চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্যে গড়ে উঠেছে।

Spread the love
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলায় চিকিৎসক নামধারী সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র এবার দন্ত চিকিৎসার বাহারি সাইনবোর্ড ও অস্থিত্বহীন পদবী দিয়ে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে কাঁড়িকাঁড়ি টাকা। এসব ভুঁইফোড় দন্ত চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলছে। আর এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছে রোগী ও তার স্বজনরা।
জানা গেছে, জেলার অলিগলিতে ভুয়া দন্ত চিকিৎসকরা চেম্বার খুলে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে। সেই সাথে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। এসব দন্ত চিকিৎসকের নেই স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি । নেই বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সনদও। আছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেম্বার ও ভুয়া ডিগ্রি সংবলিত বাহারি সাইনবোর্ড। জেলার বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে শতাধিক ডেন্টাল ক্লিনিক খুলে ভুয়া চিকিৎসক সেজে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে অনেকে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, শুধু ওষুধের পরামর্শপত্র লিখে দেয়ার জন্য রোগীদের কাছ থেকে ভিজিট নেওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। আর দাঁতের সামান্য কাজের জন্য নেন ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। এইসব চিকিৎসকদের বেশিরভাগই ভুয়া। দন্ত চিকিৎসায় নেই কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা। অনেকেই ভুয়া সনদ নিয়ে দন্ত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডেন্টাল ডিপ্লোমা পাস করে অনেকে সরাসরি চিকিৎসক পদবী ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ব্যবসা করছেন। অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠান বিএমডিসি ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান  চিকিৎসা শাস্ত্রে সনদ ও নিবন্ধনপত্র দিতে পারে না।
সূত্রে জানা যায়, দিন দিন ভুয়া চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। আর দাঁতের চিকিৎসার মতো উচ্চমূল্যের খরচ কম খরচে করার আশায় এসব ভুয়া দন্তচিকিৎসকদের রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি দাঁতের চিকিৎসার মতো সংবেদনশীল চিকিৎসায় এ ভুয়া চিকিৎসকরা রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার সময় যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন তা জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা না নিয়েই চিকিৎসা করছেন। ফলে রোগীর জীবাণুসংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এর ফলে রোগীদের রক্তবাহিত বিভিন্ন রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই অবাধে এক যন্ত্র একাধিক ব্যক্তির মুখে ঢোকানো হচ্ছে। এতে অনেকেরই দাঁত ভাল না হয়ে দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এসব ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও মন্তব্য সুশীল সমাজের।
ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক ডেন্টাল ক্লিনিক। গ্রামের কৃষক, দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষকে ধোঁকা দিয়ে অভিজ্ঞ ডাক্তার সেজে বিভিন্ন ভুয়া ডিগ্রি দেখিয়ে সাইন বোর্ড, ব্যানার ও ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে দাঁতের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অনেক হাতুড়ে চিকিৎসক পঞ্চম শ্রেণি বা অষ্টম শ্রেণি পাস করে কোনো ডাক্তারের সাথে কাজ করেছেন মর্মে এখানে এসে ডাক্তার সেজে কাজ করছেন। অথচ তারা ডেন্টাল সার্জন লিখে চিকিৎসাপত্র দিচ্ছেন। এ সব ভুয়া চিকিৎসক রোগীর দাঁতের স্কেলিং, দাঁতের ফিলিং, দাঁত তোলা, দাঁত বাঁধানোসহ দাঁতের নানা রোগের চিকিৎসার নামে হয়রানি করে টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *