সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার:
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভায় বয়ফ্রেন্ডের বাড়িতে জেসি মাহমুদ নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তবে জেসির পরিবারের অভিযোগ তাকে পরিকল্পিভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে মুন্সীগঞ্জ থানাধীন মধ্য কোর্টগাও সাকিনস্থ অভিযুক্ত বিজয় @ বিজু, পিতা: আরিফুল ইসলাম কাজী, সাং: মধ্য কোর্টগাও, থানা ও জেলা: মুন্সীগঞ্জ এর ৫ তলা বিল্ডিংয়ে। ছাদ থেকে লফিয়ে পড়লো হাত পা কিছুই ভাঙল না বিষয়টি খুবই রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জেসি মাহমুদ শহরের আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন গভ. গার্লস হাই স্কুলের এসএসসির শিক্ষার্থী ও সৌদি আরব প্রবাসী সেলিম মাহমুদের মেয়ে। জেসি মাহমুদ (১৭), পিতা: সেলিম দেওয়ান, মাতা: রিনা বেগম, গ্রাম : দক্ষিণ কেওয়ার, থানা ও জেলা: মুন্সীগঞ্জ বিগত দেড় বছর যাবত পরিবারের সাথে মধ্য কোর্টগাও সাকিনে জনৈক মন্টু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে এ ভি জি এম গভঃ গার্লস স্কুলে পড়াশোনা করে। অদ্য অদ্য ০৩-০১-২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ আসর নামাজের আদায় করে ভাড়াটিয়া বাসা হতে মোবাইল রিচার্জ করার কথা বলে বের হয়।
খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত জেসির মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অত:পর ভিকটিমের ভাই জিদানের বন্ধু বিজয় @ বিজু, পিতা: আবিদ কাজী, সাং: মধ্য কোর্টগাও, থানা ও জেলা: মুন্সীগঞ্জ ভিকটিম জেসিকে গুরুতর আহত অবস্থায় অদ্য ০৩/০১/২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ ১৮:৩০ ঘটিকায় মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ভিকটিমের ভাই সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে এসে ভিকটিমকে ঢাকা নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করে। তারপর একই তারিখ অনুমান ২০:০০ ঘটিকার দিকে পুনরায় সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শৈবাল বসাক জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে অচেতন অবস্থায় মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে তার এক যুবক। তিনি নিজেকে মেয়েটির ভাই বলে পরিচয় দেন। এসময় মেয়েটি অচেতন ছিলো। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত স্কুলছাত্রীর বড় ভাই জিদান অভিযোগ করেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে প্রতিবেশী আরিফুর রহমানের ছেলে বিজয় বিজু ফোন দিয়ে তাকে জানায় জেসি হাসপাতালে। সে তাদের বাসার ছাদ থেকে পড়ে গেছে। এরপর দ্রুত হাসপাতালে এসে অ্যাম্বুলেন্সে বোনকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হই। পথে মুক্তারপুর সেতু পার হতেই দেখি তার শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে না। এরপর তাকে ঢাকা না নিয়ে হাসপাতালে ফেরত আসি। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক জানান সে মারা গেছে।
জিদান বলেন, ‘আমার বোন কীভাবে তাদের বাসার ছাদে গেল জানিনা। ওরা আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে বাসার ছাদে নিয়ে মারধর করে মেরে ফেলেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমার বাসার ছাদ খোলা থাকে। মেয়েটি কীভাবে আমার বাসার ছাদে উঠেছে আমরা বুঝতে পারছি না। আমার বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে বলে শুনেছি। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় রেফার্ড করে। এরপর শুনেছি সে মারা গেছে। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়।’
সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান (পিপিএম-সেবা) বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। হত্যার অভিযোগ এবং প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য ধরে আমরা কাজ করছি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বলা যাবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা। ঘটনার সাথে জড়িত বিজয় @ বিজু, পিতা: আরিফুল ইসলাম কাজী, সাং: মধ্য কোর্টগাও, থানা ও জেলা: মুন্সীগঞ্জ এর বিরুদ্ধে আইনগ প্রক্রিয়াধীন।