নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের আবাসিক এলাকার চুলায় পর্যাপ্ত গ্যাসের দাবিতে তিতাস অফিস ঘেরাও করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। এ সময় তারা স্লোগান দেয়, ‘গ্যাস নাই গ্যাস দে, দুর্নীতি ছাইড়া দে’ গ্যাসের চুলায় গ্যাস নাই, মা-বোনদের ঘুম নাই’।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে শহরের চাষাঢ়া বালুরমাঠ এলাকায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস অফিসের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘেরাও ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
সামাজিক সংগঠন আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী এ কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন আহমেদ।
ঘেরাও কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, ‘এমন প্রতিবাদে এই তিতাসের টনক নড়বে না। এর আগেও আমরা এমন প্রতিবাদ করেছি। আমি কাউন্সিলর হিসেবে নয় একজন ভুক্তভোগী হিসেবে এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমার বছরে দুই লাখ টাকা গ্যাস বিল দিতে হয়। এত বিল দিয়েও আমাদের বৈদ্যুতিক চুলা এলপিজি কিনতে হচ্ছে। আমি একজন নাগরিক হিসেবে এ সকল সমস্যার সমাধান দাবি করি।’
তিনি বলেন, এমন এক-দুই ঘণ্টার কর্মসূচিতে এই নির্লজ্জ তিতাসের টনক নড়বে না। এখানে দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে হবে। আমি এতদিনে দেখেছি তারা ভাবে বিক্ষুব্ধ জনতা কিছুক্ষণ হৈচৈ করে চলে যাবে। এই তিতাস গ্যাসের অবস্থা পকেটমারের মত। তারা মনে করে ধরা পড়লে দু-চারটা কিল ঘুষি দিয়ে ছেড়ে দেবে। তারা যেন ঘুষের টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে না পারে সেজন্য আমরা দিনব্যাপী কর্মসূচি চাই।
ভুক্তভোগীরা বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহর ও ফতুল্লায় চুরির লাইন কম। বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, সোনারগাঁর প্রতিটি থানায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লাইন এই তিতাসের কর্মকর্তারা চুরি করে দিয়েছে। তাদের পিয়নরা প্রতি মাসে কোটি টাকা বিল তুলে ভাগবাটোয়ারা করে। আমার মেয়ে স্কুল থেকে এসে কান্নাকাটি করে খাবারের জন্য, গ্যাসের কারণে রান্না হয় না সময়মতো। তাহলে কর্মজীবীদের অবস্থা তো আরো করুণ।
নুর উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের অধিকার চেয়েছি, কারো দয়া চাইনি। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা বলে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আপনারা প্রয়োজনে আপাতত ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত আবাসিক চুলায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করেন। দুপুর থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখে রাত ১১টা পর্যন্ত সচল রাখেন। বিদ্যুতের মতো করে রেশনিং সিস্টেমে নিয়ে আসেন। আপনারা তিতাস কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ভাষা না বুঝেন, তবে মনে রাখবেন নারায়ণগঞ্জ সব আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। আমাদের অধিকার আমাদের বুঝিয়ে দেন। নয়তো টিকতে পারবেন না।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খোরশেদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, সিনিয়র সাংবাদিক তোফাজ্জল হোসেন, পপি রানি সরকার, ভবানী শংকর প্রমুখ। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। নয়া দিগন্ত